সাভারের ধলেশ্বরী নদীতে গোসল করতে নেমে তিন শিক্ষার্থী নিখোঁজ হয়েছেন। এসময় গুরুতর আহত অবস্থায় অপর দুই ছাত্রকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
শনিবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে সাভারের পশ্চিম ব্যাংকটাউন এলাকায় ধলেশ্বরী নদীতে গোসল করতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে।
খবর পেয়ে সাভার ফায়ার সার্ভিস ও টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে আসে। টঙ্গী থেকে ৫ সদস্যের একটি ডুবুরী দলও ধলেশ্বরী নদীতে ডুবে যাওয়া ছাত্রদের উদ্ধারে কাজ শুরু করেছেন। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত ৮টা ৪০ মিনিট) কাউকে উদ্ধার বা তাদের কোন সন্ধান পাননি ডুবুরি দল।
নিখোঁজ তিন ছাত্র হলো-রাজধানীর শেরে বাংলানগর থানার পশ্চিম কাফরুল তালতলা এলাকার মোঃ আনোয়ার হোসেনের ছেলে রাজন (১৯), শ্যাওড়াপাড়া এলাকার মেহেদি হাসান (১৮) এবং সাভার পৌর এলাকার ব্যাংক টাউন মহল্লার আবু বক্কর তালুকদারের মেঝো ছেলে আকাশ (১৮)।
এছাড়া জিহাদ ও নাহিদ নামে আরও দুই ছাত্রকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তারা সবাই রাজধানীর ধানমন্ডি আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদ্বশ শ্রেনীর বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী মোকাদ্দিম জানায়, সকালে আমাদের দেরী হওয়ায় কলেজে ঢুকতে পারিনি। রবিবার আমাদের পরীক্ষা আছে তাই সহপাঠি আকাশের সাথে সাভারে ঘুরতে আসি। একপর্যায়ে সকাল সাড়ে ১২টার দিকে আমরা ধলেশ^রী নদীতে গোসল শেষ করে উপরে উঠার সময় দেখি আকাশ, রাজন ও মেহেদি স্রোতের কারণে দূরে চলে যাচ্ছে। এসময় জিহাদ ও নাহিদ তাদেরকে টেনে তুলার চেষ্টা করেও না পারায় একপর্যায়ে তারা তলিয়ে যায়।
অপর শিক্ষার্থী ইমন জানায়, সকাল ৮টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত তাদের কলেজে ক্লাস হয়। আজকে সকালে তারা ৫মিনিট দেরীতে কলেজে পৌছলে নিরাপত্তাকর্মীরা তাদেরকে ভিতরে ঢুকতে দেয়নি। পরে আকাশের সাথে রাজন, মেহেদি, মোকাদ্দিম, জিহাদ, নাহিদ, কিবরিয়া, হাসিব, রাউফুন, মানিক, জিসামসহ আমরা সাভারে চলে আসি। একপর্যায়ে গোসল করার জন্য নদীতে নামতে রাজন, মেহেদি ও আকাশ নদীর স্রোতে তলিয়ে যায়।
এদিকে, তিন শিক্ষার্থী নিখোঁজের খবরে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন। এসময় সাভারের আমিনবাজার সার্কেলের সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ যুবায়ের হোসেনের নেতৃত্বে ফায়ারসার্ভিস ও স্থানীয় উদ্ধারকর্মীরা নিখোঁজ ছাত্রদের সন্ধানে উদ্ধার তৎরতা চালায়।
অন্যদিকে, নিখোঁজ ছাত্রদের স্বজনেরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসলে তাদের কান্নায় নদী তীরের বাতাস ভারি উঠে। এছাড়া নারী-পুরুষসহ সব বয়সের উৎসুক জনতার ভিড় কমানোর জন্য আইন-শৃক্সখলাবাহীনিকেও বেগ পেতে হয়।
সাভার ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার লিটন আহমেদ জানান, আমাদের দুইটি ইউনিটসহ ডুবুরী দলের সদস্যরা নিখোঁজ ছাত্রদের উদ্ধারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে তারা কোথায় ডুবে গেছে সেই জায়গাটি সুনির্দিষ্ট করে বলতে না পারায় এবং প্রচুর স্রোতের কারণে উদ্ধারকাজে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। তবে নিখোঁজ ছাত্রদের খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত তাদের উদ্ধার অভিযান চলমান থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।