সাইফুল কবিরকে অপহরণ করার পর দুর্বৃত্তরা তার স্ত্রী সামিনাকে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। কিন্তু স্ত্রী উল্টো সেই দুর্বৃত্তদের সঙ্গে কন্ট্রাক্ট করেন স্বামীকে মেরে ফেলার জন্য। সামিনার কথা শুনে পাওনাদাররা হতবাক। বলে কী! স্বামীকে ফেরত না নিয়ে উল্টো মাইনাস করতে কন্ট্রাক্ট করতে চাচ্ছেন! টাকার লোভ সামলাতে পারেননি পাওনাদাররা। রাজি হয়ে যান তারা। সাইফুল কবিরকে আটকে রেখেই শুরু হয় দরকষাকষি। ১২ লাখ টাকায় কন্ট্রাক্ট করতে চান সামিনা। কিন্তু মানেন না পাওনাদাররা। সাড়ে ১২ লাখ? প্রশ্ন রাখেন সামিনা। ২০ লাখের নিচে নামবেন না সাফ জানিয়ে দেন পাওনাদাররা। একসময় কথা পাকাপাকি হয়। ১৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে ১৬ লাখ টাকা খুনের জন্য। বাকি ২ লাখ লাশ গুমের খরচ। এরপর শুরু হয় সাইফুল কবিরের ওপর অকথ্য নির্যাতন। একপর্যায়ে নিভে যায় সাইফুল কবিরের প্রাণপ্রদীপ। গর্ত করে মাটিচাপা দেওয়া হয় সাইফুল কবিরের লাশ। খুনের পরদিনই সাইফুলের স্ত্রী পালিয়ে যান আমেরিকায়। কিন্তু লাশ বেশি দিন গুম থাকেনি। পুলিশ খবর পায়। মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করে লাশ। গ্রেফতার হন দুই খুনি। কিন্তু সামিনা তো লাপাত্তা! পাবে কোথায়? মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আমেরিকায় অবস্থানকারী সামিনার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। প্রেমের ফাঁদ পাতেন তিনি। সামিনাকে টাকা পয়সার লোভ দেখানো হয়। ঘটনার তিন মাস ১৭ দিন পর ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে অবতরণ করেন সামিনা। ঠিক তখনই পাকড়াও করা হয় কিলার সামিনাকে। ফাঁস হয় এক নারী সিরিয়াল কিলারের আরও খুনের কাহিনি। ঘটনাটি রাজধানীর খিলক্ষেতের। ২০১৪ সালের ১০ ডিসেম্বর একটি গ্যারেজের ভিতরের মাটি খুঁড়ে ব্যবসায়ী সাইফুল কবিরের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ সময় গ্রেফতার করা হয় দুই ব্যক্তিকে। তারা বলেছেন, সাইফুলকে ২ ডিসেম্বর হত্যা করা হয়েছে। আর এই হত্যার পেছনের হোতা আর কেউ নন, তিনি সাইফুলের দ্বিতীয় স্ত্রী।
